Wellcome to National Portal
Main Comtent Skiped

Title
Kartic maser krishi
Details

আমন ধান :   এ মাসে অনেকের আমন ধান পেকে যাবে তাই রোদলা দিন দেখে ধান কাটতে হবে। সাধারনত ছড়ার ৮০% ধান পেকে গেলে ক্ষেতের ধান কাটা যায়। আগামী মৌসুমের জন্য বীজ রাখতে চাইলে প্রথমে সুস্থ সবল ভালো ফলন দেখে ফসল নির্বাচন করতে হবে। এরপর কেটে মাড়াই ঝাড়াই করার পর রোদে ভালোমত শুকাতে হবে। শুকানো গরম ধান আবার ঝেড়ে পরিস্কার করতে হবে এবং ছায়ায় রেখে ঠান্ডা করতে হবে। পরিস্কার ঠান্ডা ধান বায়ুরোধী পাত্রে সংরক্ষণ করতে হবে। বীজ রাখার পাত্র মাটি বা মেঝেতে না রেখে পাটাতনের উপর রাখতে হবে। পোকার উপদ্রব থেকে রেহাই পেতে হলে ধানের সাথে নিম, নিসিন্দা, ল্যান্টানার পাতা শুকিয়ে গুড়া করে মিশিয়ে দিতে হবে।

গম :   কার্তিক মাসের দ্বিতীয় পক্ষ থেকে গম বীজ বপনের প্রস্তুতি নিতে হবে। দোআশ মাটিতে গম ভালো হয়। অধিক ফলনের জন্য গমের আধুনিক জাত যেমন- আনন্দ, বরকত কাঞ্চন, সৌরভ, গেšরব, শতাব্দী, সুফী, বিজয়, বারি গম-২৭, বারি গম-২৮, রোপন করতে হবে। বীজ বপনের আগে অনুমোদিত ছত্রাকনাশক দিয়ে বীজ শোধন করে নিতে হবে। সেচযুক্ত চাষের জন্য বিঘা প্রতি ১৬ কেজি এবং সেচবিহীন চাষের জন্য বিঘা প্রতি ১৩ কেজি বীজ বপন করতে হবে। ইউরিয়া ছাড়া অন্যান্য সার জমি তৈরির শেষ চাষের সময় এবং ইউরিয়া তিন কিস্তিতে উপরি প্রয়োগ করতে হবে। বীজ বপনের ১৩-২১ দিনের মধ্যে প্রথম সেচ প্রয়োজন। এরপর প্রতি ৩০-৩৫ দিন পর পর ২ বার সেচ দিলে খুব ভালো ফলন পাওয়া যায়।   

আখ :  এখন আখের চারা লাগানোর উপযুক্ত সময়। ভালোভাবে জমি তৈরি করে আখের চারা রোপর করা উচিত। আখ লাগানোর জন্য সারি থেকে সারির দুরত্ব ৯০ থেকে ১২০ সেন্টিমিটার এবং চারা থেকে চারার দুরত্ব ৬০ সেন্টিমিটার রাখতে হবে। এভাবে চারা রোপর করলে বিঘা প্রতি ২২০০ থেকে ২৫০০ টি চারার প্রয়োজন হয়।                                                  

ভুট্টা : ভুট্টা চাষ করতে হলে এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে এবং জমি তৈরি করে বীজ বপন করতে হবে। ভুট্টার আধুনিক জাত গুলো হলো বারি ভুট্টা-৬, ৭ , বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৭, ৮, ৯, ১০, ১১।  সরিষা ও অন্যান্য তেল ফসল :- কার্তিক মাস সরিষা চাষেরও উপযুক্ত সময়। সরিষার প্রচলিত জাত গুলোর মধ্যে টরি-৭, রাই-৫, কল্যানীয়া, সোনালী, সম্পদ, বারি সরিষা-৬, ৭, ৮ উল্লেখযোগ্য। জাত ভেদে বিঘা প্রতি গড়ে ১ থেকে ১.৫ কেজি বীজের প্রয়োজন পড়ে। বিঘা প্রতি ৩৩ থেকে ৩৭ কেজি ইউরিয়া, ২২ থেকে ২৪ কেজি টিএসপি, ১১ থেকে ১৩ কেজি এমওপি, ২০ থেকে ২৪ কেজি জিপসাম এবং ১ কেজি দস্তা সারের প্রয়োজন হয়। সরিষা ছাড়াও অন্যান্য তেল ফসল যেমন তিল, তিসি, চিনাবাদাম, সূর্যমুখি এ সময় চাষ করা যায়।

আলু :  আলুর জন্য জমি তৈরি ও বীজ বপনের উপযুক্ত সময় এ মাসেই। হালকা প্রকৃতির মাটি অর্থাৎ বেলে দোআশ মাটি আলু চাষের জন্য বেশ উপযোগী। ভালো ফলনের জন্য বীজ আলু হিসেবে যে জাতগুলো উপযুক্ত তাহলো ডায়মন্ড, কার্ডিনাল, মুলাটা, কারেজ, প্যাট্রেনিজ, হীরা প্রভৃতি। আলু চাষের জন্য বিঘা প্রতি ২০০০ থেকে ২৭০০ কেজি বীজ আলুর দরকার হয়। আর ১ বিঘা জমিতে আলু চাষের জন্য গড়ে ৪৫ কেজি ইউরিয়া, ৩০ কেজি টিএসপি, ৩৩ কেজি এমওপি, ২০ কেজি জিপসাম সারের প্রয়োজন হয়। তাছাড়া বিঘা প্রতি ১.৫ টন জৈবসার ব্যবহার করলে ফলন অনেক বেশি পাওয়া যায়। 

ডাল ফসল :  ডাল একটি উৎকৃষ্ট আমিষ জাতীয় খাবার। কৃষক ভায়েরা কম সময়ে অধিক লাভের জন্য এ সময় মুসুর, মুগ, মাসকলাই, খেসারি, ফেলন, অড়হর, সয়াবিন, ছোলা, ফেলন সহ অন্যান ডাল ফসল চাষ করতে পারেন। সরকার ডাল ফসল চাষে সহজ শর্তে কৃষি ঋণ প্রদান করছে। আপনিও এ সুযোগ গ্রহন করতে পারেন।   

শাকসবজি :  শীতকালীন সবজি চাষের উপযুক্ত সময় এখন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বীজতলায় উন্নতজাতের দেশি বিদেশী ফুলকপি, বাধাকপি, ওলকপি, শালগম, টমেটো, বেগুন, ব্রোকলি বা সবুজ ফুলকপি এসবের চার উৎপাদনের জন্য উচু জায়গায় তৈরি বীজতলায় বীজ বপন করতে হবে। আর গত মাসে চারা উৎপাদন করে থাকলে এখন মুল জমিতে চারা রোপন করতে পারেন।               

অন্যান্য ফসলের মধ্যে এ সময় পেয়াজ, রসুন, মরিচ, ধনিয়া, কুসুম জোয়ার এসবের চাষ করা যায়। সাথী বা মিশ্র ফসল ফসল হিসেবেও এসবের চাষ করে অধিক ফলন পাওয়া যায়।    

প্রানি সম্পদ ঃ    কৃষক ভায়েরা সামনে শীতকাল আসছে। শীতকালে পোলট্রিতে রোগ বালাই বেড়ে যায়। এ সময় রানীক্ষেত, মাইকোপ্লাজমোসিস, ফাউল টাইফয়েড, বসন্ত রোগ, কলেরা এসব দেখা দিতে পারে। এসব রোগ থেকে হাস মুরগীকে বাচাতে হলে এ মাসেই টিকা দিতে হবে। গত মাসে ফুটানো মুরগীর বাচ্চার ককসিডিয়া রোগ হতে পারে। রোগ দেখা দিলে সাথে সাথে চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে হবে।  গবাদি পশুর আবাসস্থল মেরামত করে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। গবাদি পশুকে খড়ের সাখে তাজা ঘাস  খাওয়াতে হবে। রাতে অবশ্যই গবাদি পশুকে বাইরে না রেখে ঘরের ভিতর রাখতে হবে। এ সময় নিয়মিত গবাদি পশুকে কৃমির ওষুধ খাওয়ানো দরকার। গরুর তড়কা, বাদলা, গলাফুলা ওলান ফুলা রোগের জন্য প্রতিষেধক, প্রতিরোধক ব্যবস্থা নিতে হবে।                  

মৎস্য সম্পদ :    এ সময় পুকুরে জন্মানো আগাছা পরিস্কার করতে হবে। পুকুরের মাছকে নিয়মিত পুষ্টিকর সম্পুরক খাবার সরবরাহ করতে হবে। এসময়ও পুকুরে প্রাকৃতিক খাবারের উৎপাদন বাড়াতে রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হবে। যেসব পুকুরে মাছ আছে সেসব পুকুরে জাল টেনে মাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা অব্যাহত রাখবেন। রোগ প্রতিরোধে একর প্রতি ৪৫ থেকে ৬০ কেজি চুন প্রয়োগ করতে পারেন। এসময় জলাশয়ে খাচায় বা প্যানে মাছ চাষ করতে পারেন। আর মাছ চাষ সংক্রান্ত যে কোন প্রয়োজনে আপনার উপজেলার সংশ্লিষ্ট উপজেলা মৎস্য অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন।

Attachments
Publish Date
17/10/2019
Archieve Date
30/11/2019