‘আমাদের কর্মই আমাদের ভবিষ্যৎ,পুষ্টিকর খাদ্যেই হবে আকাঙ্খিত ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ১৬ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে জেলা প্রশাসন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও খাদ্য অধিদপ্তর রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা এর আয়োজনে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙ্গামাটি অঞ্চলের সভা কক্ষে বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০১৯ উদযাপন উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা ও আইসিটি) শারমিন আলম(উপসচিব) এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাঙ্গামাটি জেলার উপ পরিচালক কৃষিবিদ পবন কুমার চাকমা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাঙ্গামাটি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক(ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ মো: নাসিম হায়দার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাঙ্গামাটি জেলার জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার কৃষিবিদ কৃষ্ণ প্রসাদ মল্লিক এবং রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো: জাহাঙ্গীর আলম। আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে কৃষি তথ্য সার্ভিস রাঙ্গামাটি অঞ্চলের আয়োজনে বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০১৯ এর প্রতিপাদ্যের আলোকে নির্মিত ডকুড্রামা প্রদর্শন করা হয়। রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আপ্রু মারমার উপস্থাপনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙ্গামাটি জেলার অতিরিক্ত উপপরিচালক(শস্য) কৃষিবিদ এম,এম,শাহ্ নেয়াজ। তিনি বলেন বাংলাদেশের কৃষি গবেষণা ও কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ কার্যক্রমের ধারা ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির পর্যায় থেকে পুষ্টিমূল্য বৃদ্ধি ও নিরাপদ খাদ্যের দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং এ কাজে ইতিমধ্যে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে। রাঙ্গামাটি জেলার খাদ্য উৎপাদনের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ফসল উৎপাদনের বর্তমান অবস্থা, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, সমস্যা, সম্ভাবনা এবং সুপারিশ সমূহের বিষয়ে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করেন ডিএই রাঙ্গামাটি জেলার উপ পরিচালক কৃষিবিদ পবন কুমার চাকমা। ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে পার্বত্য এলাকার পতিত জমিতে মিশ্র ফল বাগান স্থাপনের উপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো: জাহাঙ্গীর আলম বলেন সভ্যতার এই চরম উন্নতির যুগেও বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রায় ৮০ কোটি মানুষ কম বেশি ক্ষুধার্ত থাকে। দেশের দরিদ্র এবং অতিদরিদ্র জনগনের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষে ভিজিডি, ভিজিএফ, ওএমএসসহ বিভিন্ন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। উৎপাদিত খাদ্য পরিকল্পিতভাবে সুষম বন্টন করা গেলে লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। কৃষিবিদ মো: নাসিম হায়দার বলেন বর্তমান সরকারের গৃহীত কর্মকান্ড সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ পুরোপুরি ক্ষুধামুক্ত হবে। বিশ্বের সবার ভবিষ্যৎ খাদ্য চাহিদা মেটানোর জন্য ২০৫০ সালে খাদ্য উৎপাদন ৬০% বাড়াতে হবে। পার্বত্য এলাকায় মোট জমির মাত্র শতকরা ৫ ভাগ জমিতে বর্তমানে ফসল আবাদ হচ্ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে পার্বত্য এলাকার পতিত জমিতে পরিকল্পিত মিশ্র ফল বাগান স্থাপনের উপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। সভাপতির বক্তব্যে শারমিন আলম বলেন ১৯৭২ সালে দেশে খাদ্য শস্যের উৎপাদন ছিল ১ কোটি ১০ লাখ মেট্রিক টন আর লোকসংখ্যা ছিল প্রায় ৭.৫ কোটি। প্রতিবছর জনসংখ্যা বাড়ছে এবং কৃষি জমিও কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। ফলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ভবিষ্যৎ খাদ্য চাহিদা পূরণে আমাদের এখনই যথাযথ পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে। বর্তমান সরকার সে লক্ষ অর্জণে এসডিজি ২০৩০ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সব ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে যার যার অবস্থান থেকে এ লক্ষ্য পূরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়ার আহবান জানান। আলোচনা সভার শুরুতে দিবসটি পালন উপলক্ষে একটি র্যালী রাঙ্গামাটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সমূহ প্রদক্ষিণ করে। অনুষ্ঠানে রাঙ্গামাটি জেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ, কৃষক/কৃষানী, জনপ্রতিনিধি এবং অন্যান্য সুধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS