কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাঙ্গামাটি অঞ্চল এর আয়োজনে এবং কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের ডাল, তেল ও মশলা বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ প্রকল্প - ৩য় পর্যায়(১ম সংশোধিত), কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, ঢাকা এর আওতায় ১০ নভেম্বর ২০২০ তারিখে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সভাকক্ষে প্রকল্পের ২০২০-২১ অর্থ বছরের কর্মপরিকল্পনা ও ২০১৯-২০ অর্থ বছরে বাস্তবায়িত মাঠ কার্যক্রম পর্যালোচনা বিষয়ক দিনব্যাপী এক আঞ্চলিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাঙ্গামাটি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো: ফজলুর রহমান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, ঢাকার কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের ডাল, তেল ও মশলা বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ প্রকল্প - ৩য় পর্যায়(১ম সংশোধিত) এর প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ মো: খায়রুল আলম। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙ্গামাটি জেলার উপ পরিচালক কৃষিবিদ পবন কুমার চাকমা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খাগড়াছড়ি জেলার উপ পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ মর্ত্তুজ আলী, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবং বান্দরবান জেলার উপ পরিচালক কৃষিবিদ ড. এ কে এম নাজমুল হক এবং খাগড়াছড়ি পাহাড়ী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুন্সী রাশীদ আহমদ ।
কর্মশালার শুরুতে প্রকল্পের কার্যক্রম, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করেন প্রকল্পের উপ প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ ড.ফ.ম. মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন এই প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের বীজ উৎপাদন এবং বিক্রির জন্য ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষক উদ্যোক্তা(ঝগঊ) তৈরি করা হয়েছে, বীজ সংরক্ষণের জন্য প্লাস্টিকের ড্রাম, ময়েশচার মিটার, বীজ শুকানোর ড্রাইং কিট, মৌবাক্স ইত্যাদি সরবরাহ করা হয়েছে এবং এ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এর মাধ্যমে ডাল, তেল ও মশলা জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি, আমদানি হ্রাস ও মানসম্পন্ন বীজ উৎপাদন করা সম্ভব হবে মর্মে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি গ্রামীন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, মৌচাষ বৃদ্ধি ও ভ‚গর্ভস্থ পানির ব্যবহার হ্রাস করাও সম্ভব হবে। টেকনিক্যাল পর্বে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলার পক্ষে প্রকল্পের চলমান কার্যাবলী, সমস্যা ও সুপারিশ সমূহ উপস্থাপন করা হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিবিদ মো: খায়রুল আলম বলেন দেশে মশলা ফসলের উৎপাদন চাহিদার তুলনায় অনেক কম হওয়ার কারনে প্রচুর পরিমান বৈদেশিক মূদ্রা খরচ করে তা বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। আমাদের দেশ ডাল, তেল ও মশলা ফসলের উন্নতমানের বীজের যথেষ্ট চাহিদা থাকা সত্বেও কৃষক পর্যায়ে সে চাহিদা সরকারি ও বেসরকারিভাবে মেটানো সম্ভব হচ্ছে না বিধায় বেশিরভাগ কৃষক নিজেদের উৎপাদিত বীজ ব্যবহার করে। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল ডাল, তেল ও মশলা ফসল চাষের জন্য একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এলাকা। এই প্রকল্পের মাধ্যমে এ এলাকায় ডাল, তেল ও মশলা ফসলের উন্নতমানের বীজ উৎপাদনের মাধ্যমে এইসব ফসলের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য পরিমান বাড়বে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সভাপতির বক্তব্যে কৃষিবিদ মো: ফজলুর রহমান বলেন ভালো ফলনের জন্য ভালো বীজের কোন বিকল্প নেই। শুধুমাত্র উন্নতমানের বীজ ব্যবহার করে ফসলের উৎপাদন শতকরা ২০ থেকে ২৫ ভাগ পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে। প্রদর্শণী ক্ষেতে চারা লাগানো থেকে ফসল কর্তণ, মাড়াই, ঝাড়াই, গ্রেডিং ও সংরক্ষণের প্রতিটি পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট উপসহকারী কৃষি অফিসার, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার অথবা উপজেলা কৃষি অফিসারের সংশ্লিষ্টতা থাকলে উৎপাদিত বীজের সঠিক মান বজায় রাখা সম্ভব হবে। তিনি ইউনিয়ন পর্যায়ে উন্নতমানের বীজ উৎপাদক কৃষক উদ্যোক্তাদের(ঝগঊ) কার্যক্রমকে আরো বেগবান করতে এবং আশে পাশের অন্যান্য কৃষকদের এ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য আহব্বান জানান। কর্মশালায় রাঙ্গামাটি অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, তুলা উন্নয়ন বোর্ড, ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ পরমানু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, কৃষি তথ্য সার্ভিস, কৃষি বিপনন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন এর প্রতিনিধিবৃন্দ, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, কৃষক, বীজ বিক্রেতাসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্যরা অংশগ্রহন করেন এবং মতামত ব্যক্ত করেন।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS