কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার আয়োজনে এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি ঢাকার অনাবাদি জমি ও বসতবাড়ির আঙ্গিনায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন প্রকল্পের সহযোগিতায় “বসতবাড়িতে পারিবারিক মডেল পুষ্টি বাগান স্থাপন˝ বিষয়ে ১৫/০৬/২০২১ থেকে ১৬/০৬/২০২১ তারিখ পর্যন্ত ২(দুই) দিন ব্যাপী উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণের প্রশিক্ষণ এবং মাঠ পরিদর্শণ অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার উপ পরিচালক কৃষিবিদ কৃষ্ণ প্রসাদ মল্লিক। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার কৃষিবিদ তপন কুমার পাল, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাঙ্গামাটি অঞ্চল কার্যালয়ের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মো: নাসিম হায়দার। প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিবিদ কৃষ্ণ প্রসাদ মল্লিক বলেন শাক-সবজি ও ফল-মূল ভিটামিন ও খনিজের অন্যতম প্রধান উৎস। ভিটামিন ও খনিজ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, শরীরকে সতেজ রাখে এবং শর্করা ও আমিষের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। অথচ বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের মানুষ প্রয়োজনীয় পরিমাণ শাক-সবজি গ্রহণ করে না। এতে তারা চরম পুষ্টিহীনতায় ভুগছে এবং নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের দৈনিক নূন্যতম ২০০ গ্রাম সবজি খাওয়া প্রয়োজন। অথচ আমাদের দেশে একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষ প্রতিদিন গড়ে মাত্র ৫৩ গ্রাম শাক-সবজি গ্রহণ করে। বাংলাদেশের মোট আবাদী জমির শতকরা পাঁচ ভাগের মত প্রায় দেড় কোটি বসতবাড়ি রয়েছে। বসতবাড়ির সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রাম বাংলার দরিদ্র মানুষ বছরব্যাপী প্রচুর পরিমাণ শাক-সবজি ও ফল-মূল উৎপাদন করে প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পারে। বসতবাড়ির সীমিত পরিসরের জায়গায় চাষকৃত সবজিকে অল্প পরিশ্রমেই সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে রোগ, পোকা মাকড়ের হাত থেকে রক্ষা করা যায়। এতে করে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে অধিক পুষ্টি সমৃদ্ধ, স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়। বসতবাড়িতে পারিবারিক মডেল পুষ্টি বাগান স্থাপন বিষয়ক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে লব্ধ জ্ঞান ও দক্ষতা সঠিকভাবে প্রয়োগের মাধ্যমে কৃষকের বসতবাড়ির আঙ্গিনায় পরিবেশবান্ধব সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার সাথে উন্নত প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটিয়ে বছরব্যাপী পরিবারের পুষ্টি চাহিদার অনেকাংশ পূরণ করা সম্ভব হবে মর্মে তিনি আশবাদ ব্যক্ত করেন। প্রশিক্ষণের অংশ হিসাবে মাঠ পরিদর্শণে প্রশিক্ষণার্থীগণ রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার কুতুবছড়ির মধ্যপাড়া এলাকার বিভিন্ন প্রগতিশীল কৃষকের বসতবাড়ির আঙ্গিনায় এবং মাঠে বাস্তবায়িত কৃষি প্রযুক্তি ও কার্যক্রম যেমন- পারিবারিক পুষ্টি বাগান, ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন, ওলকচু চাষ, ড্রাগন ফল চাষ, স্থানীয় জাতের ধ্যান্না মরিচ চাষ, পাহাড়ী ছড়ার পাশে পেয়াজ চাষ, বসতবাড়িতে মৌ চাষ, মুজিব শতবর্ষের নিরাপদ সব্জি গ্রাম ইত্যাদি সরেজমিনে পরিদর্শণ করেন। প্রশিক্ষণে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার বিভিন্ন উপজেলার ৩০ জন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অংশগ্রহন করেন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস