পরিবর্তিত আবহাওয়া উপযোগী ফসল ও ফলের জাত উন্নয়ন কর্মসূচীর অর্থায়নে বাংলাদেশ পরমানু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উপকেন্দ্রে, খাগড়াছড়ি এর আয়োজনে খাগড়াছড়ি সদরে অবস্থিত বিনা উপকেন্দ্রের প্রশিক্ষণ কক্ষে গত ০৪/১১/২০১৯ তারিখ দিনব্যাপী পাহাড়াঞ্চল উপযোগী বিনা উদ্ভাবিত জাত ও প্রযুক্তিসমূহের সম্প্রসারণ ও ভবিষ্যৎ করণীয় শীর্ষক আঞ্চলিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। বিনা, ময়মনসিংহ এর পরিচালক( প্রশিক্ষণ ও পরিকল্পনা) কৃষিবিদ ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পরমানু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) ময়মনসিংহ এর মহাপরিচালক কৃষিবিদ ড. বীরেশ কুমার গোস্বামী। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ড. মো: মুনজুরুল ইসলাম মন্ডল, পিএসও(আরসি) বিনা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রঙ্গিামাটি অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. নাসিম হায়দার, কৃষিবিদ মো: মর্ত্তুজ আলী, উপপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা এবং কৃষিবিদ পবন কুমার চাকমা, উপপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা ।
বিনা খাগড়াছড়ি কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ জুয়েল সরকারের উপস্থাপনায় কর্মশালার শুরুতে খাগড়াছড়ি কেন্দ্রে বিনার গবেষণা কার্যক্রম উপস্থাপন এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিনা উপকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষিবিদ রিগ্যান গুপ্ত। টেকনিক্যাল সেশনে পার্বত্য অঞ্চলের উপযোগী বিনা উদ্ভাবিত জাত ও প্রযুক্তিসমূহের পরিচিতি, বৈশিষ্ট ও আবাদেও সম্ভাবনা বিষয়ে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করেন ড. মো: মুনজুরুল ইসলাম মন্ডল। এছাড়া ডিএই রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় মাঠ পর্যায়ে বিনা উদ্ভাবিত জাত ও প্রযুক্তিসমূহের বর্তমান আবাদ পরিস্থিতি, সম্প্রসারণের প্রতিবন্ধকতা এবং প্রতিবন্ধকতা উত্তরণে করণীয় বিষয়ে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করেন যথাক্রমে কৃষিবিদ পবন কুমার চাকমা এবং কৃষিবিদ মো: মর্ত্তুজ আলী। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কৃষিবিদ পবন কুমার চাকমা বলেন বিনা উদ্ভাবিত জাত ও প্রযুক্তিসমূহ কৃষির সামগ্রিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। পার্বত্য এলাকায় খরিপ-১ মৌসুমে খরা সহিষ্ণু বিনাধান-১৯, রবি মৌসুমে নাবী জাত বিনাধান-১৪ এবং জুমে চাষের জন্য বিনা তিল ও নেরিকা মিউট্যান্ট ধান ইতিমধ্যে কৃষকদের মাঝে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জণ করেছে। এছাড়া এ এলাকার উপযোগী অন্যান্য ফসলের জাত সম্প্রসারণের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কৃষিবিদ মো. নাসিম হায়দার বলেন উদ্যান ফসল সম্প্রসারণের জন্য পার্বত্য এলাকা অত্যন্ত উপযোগি। বারি লেবু-১ প্রায় বীজবিহীন এবং সারাবছর গাছে পর্যাপ্ত ফল ধরে বিধায় তা কৃষক পর্যায়ে ব্যপক আকারে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য চারা/কলম প্রাপ্তি নিশ্চিত করা ও কৃষকদের মাঝে প্রচারনা চালানোর ব্যাপারে তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিবিদ ড. বীরেশ কুমার গোস্বামী বলেন পরিবর্তিত আবহাওয়ার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ পরমানু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) বিভিন্ন ফসলের উপযোগী জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে চলেছে। বিনা উদ্ভাবিত খরা, বন্যা ও লবনাক্ততা সহিষ্ণু বিভিন্ন জাতের ধান ও অন্যন্য ফসল দূর্যোগপ্রবন এলাকাগুলোতে কৃষকরা সাফল্যের সাথে চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। বিনা উদ্ভাবিত পার্বত্য এলাকার উপযোগী বিভিন্ন ফসলের নতুন নতুন জাত ও প্রযুক্তি সমূহ কার্যকরভাবে কৃষকদের মাঝে বিস্তার করার উপায় সনাক্তকরণ এবং সে অনুযায়ী সম্প্রসারণের প্রচেষ্টা চালানোর জন্য তিনি সকলের প্রতি আহব্বান জানান। মৌসুম উপযোগী সঠিক জাত উপযুক্ত স্থানে সঠিক কৃষকের কাছে সময়মত পৌছে দেওয়া গেলে পাহাড়াঞ্চলের কৃষিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। কর্মশালায় বারি, বিএসআরআই, এআইএস, তুলা উন্নয়ন বোর্ড, ডিএই ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সুনির্দিষ্ট মতামত ব্যক্ত করেন। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় কৃষি মন্ত্রনালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কৃষিবিদগণ, কৃষক/কৃষাণী ও প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ অংশগ্রহন করেন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস