গত ১৯ মার্চ ২০২৩ তারিখে কৃষি তথ্য সার্ভিসের আঞ্চলিক কার্যালয়, রাঙ্গামাটি অঞ্চলের আয়োজনে দিনব্যাপী এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা বাস্তবায়নে করণীয় শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় রাঙ্গামাটির বনরুপাস্থ আঞ্চলিক কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাঙ্গামাটি অঞ্চল কার্যালয়ের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো: নাসিম হায়দারের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাঙ্গামাটি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ তপন কুমার পাল। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙ্গামাটি জেলার ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক কৃষিবিদ আপ্রæ মারমা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বান্দরবান জেলার জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: বাসিরুল আলম, বনরুপা হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক কৃষিবিদ কাজী শফিকুল ইসলাম। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আঞ্চলিক কৃষি তথ্য অফিসার কৃষিবিদ প্রসেনজিৎ মিস্ত্রী। এ সময় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না বাস্তবায়নে পার্বত্য রাঙ্গামাটি অঞ্চলে করণীয় বিষয়ে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করা হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিবিদ তপন কুমার পাল বলেন একবিংশ শতাব্দীর আজকে এই সময়ে দাঁড়িয়ে গোটা বিশ্ব ভীষণ অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছে। ২০২৩ সালে বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দার পূর্বাভাস দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বলছে, যুদ্ধ পরিস্থিতি দ্রæত স্বাভাবিক না হলে দুর্ভিক্ষও দেখা দিতে পারে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (এফএও)-র মতে, বিশ্বের ৪৫টি দেশে ঘাটতিজনিত মারাত্মক খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কা এখন সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে এশিয়া মহাদেশভুক্ত দেশ আছে ৯টি, যার মধ্যে বাংলাদেশসহ তিনটি দেশ দক্ষিণ এশিয়ার। এফএও'র হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরেই বিশ্বব্যাপী খাদ্যশস্য উৎপাদন কমবে ১.৪ শতাংশ। এই দিকগুলো বিবেচনায় রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক অনুশাসন প্রদান করেন সকল দেশবাসীর উদ্দেশ্যে দেশের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। প্রধানমন্ত্রীর এই অনুশাসন বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ ও কর্মসূচি কৃষি মন্ত্রণালয় গ্রহণ করেছে। তিনি আরো বলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার বিভিন্ন পতিত জমি, সরকারি/বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অব্যবহৃত পতিত জমি, কাপ্তাই লেকের জলেভাসা জমিকে পরিকল্পিত চাষের আওতায় আনার জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বসতবাড়ির আংগীনায় সব্জি চাষ উৎসাহিত করা, বিদ্যমান শস্যবিন্যাসে অধিক সংখক ফসল অন্তর্ভূক্ত করা, মিশ্রফসল/সাথীফসল/রিলে ফসল চাষ বৃদ্ধি করা, শুষ্ক মৌসুমে সেচ সক্ষমতা বৃদ্ধি করা, মাশরুম চাষ বৃদ্ধি করা, স্বল্প সুদে কৃষি ঋণ প্রাপ্তি নিশ্চিত করা ইত্যাদি পদক্ষেপের মাধ্যমে পাহাড়ী কৃষি আরো সমৃদ্ধ হবে মর্মে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সভাপতির বক্তব্যে কৃষিবিদ মো: নাসিম হায়দার বলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল দেশের মোট আয়তনের শতকরা ১০ ভাগ হলেও এ অঞ্চলের আয়তনের মাত্র শতকরা ৯-১০ ভাগ জায়গায় কৃষি কাজ করা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় পতিত জমিকে চাষাবাদের আওতায় আনতে প্রণদনা কর্মসূচীর আওতায় ইতিমধ্যে বোরো ধান, গম, ভুট্টা, সরিষা, সূর্যমূখী, চিনা বাদাম, শীতকালীন মুগ, পেঁয়াজ, গ্রীষ্মকালীন মুগ ইত্যাদি ফসল চাষের জন্য ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়েছে। কৃষি প্রণোদনার ক্ষেত্রে অন্য যেকোন সময়ের তুলনায় বর্তমান সরকারের ভুমিকা উল্লেখ করার মতো। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সমৃদ্ধ হবে কৃষি, সমৃদ্ধ হবে দেশ ও জাতি। সেমিনারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন তিন পার্বত্য জেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ, কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্রের প্রতিনিধি, কৃষক, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিগন অংশগ্রহন করেন এবং গুরুত্বপূর্ণ মতামত ব্যক্ত করেন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস