গত ০৬ এপ্রিল ২০২৩ তারিখ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাঙ্গামাটি অঞ্চলের আয়োজনে রাঙ্গামাটি সদরের শাহ্ বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে সম্ভাবনাময় কাজু বাদাম ও কফি আবাদ, সম্প্রসারণ এবং বিভিন্ন জাতের ফলসহ টেকসই ফসলের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধি সম্পর্কিত মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রæ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এমপি। সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী বীর বাহাদু উশৈসিং এমপি, জাতীয় সংসদের খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি, সংরক্ষিত নারী আসন-৯ এর সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মোঃ শাহজাহান কবীর, রাঙ্গামাটি জেলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান এবং রাঙ্গামাটি জেলার পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙ্গামাটি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ তপন কুমার পাল। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেন চা চাষের কথা আসলেই যেমন সিলেট, মৌলভীবাজারের কথাই মনে পড়ে, তেমনি কফি ও কাজুবাদাম চাষের বিষয় আসলে সবাই এক নামে পার্বত্য চট্টগ্রামকে চিনবে। বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম কৃষিতে অভুতপূর্ব সাফল্য অর্জণ করেছে। উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত থাকলে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল দেশের জন্য বোঝা না হয়ে অন্যতম সম্পদশালী এলাকায় পরিনত হবে মর্মে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বলেন দেশের সমতল এলাকার তুলনায় পার্বত্য এলাকা কৃষিতে এখনও পিছিয়ে আছে। তবে এ এলাকায় প্রচলিত ফসলের পাশাপাশি বেশ কিছু উচ্চমূল্যের ফসল যেমন কফি, কাজুবাদাম, গোলমরিচ, ড্রাগনফ্রুট ইত্যাদির আবাদ বৃদ্ধির এবং তা প্রক্রিয়াজাত করে প্রচুর বৈদেশিক মূদ্রা অর্জণের সুযোগ রয়েছে। পার্বত্য এলাকার কৃষিখাতকে আরো এগিয়ে নিতে নিরলসভাবে কাজ করছে বর্তমান সরকার। এখানকার কৃষকরা যাতে উৎপাদিত পণ্য সহজে বিক্রি করতে পারে সেই লক্ষ্যে একটি সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। গতানুগতিক খোরপোষ কৃষিকাজ করে মানুষের জীবনমানের উল্লেখযোগ্য পরিবর্ত করা যায় না। কৃষি আধুনিক হলেই মানুষের জীবনমানের কাঙ্খিত উন্নয়ন ঘটবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার কৃষিকে আরো আধুনিক ও লাভজনক করতে কাজ করে যাচ্ছে। কৃষি উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাত ও রফতানি আয় বৃদ্ধিতে বর্তমান সরকার সমন্বিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। শুষ্ক মৌসুমে পার্বত্য এলাকায় সেচ সমস্যা নিরসনে দ্রæত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। কোন পাহাড়কে আর পতিত রাখা হবে না। মন্ত্রী মহোদয় আরো বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভিয়েতনাম শুধুমাত্র কাজুবাদাম রফতানি করে বছরে ৪০ হাজার কোটি টাকা আয় করে থাকে। দেশটি যে পরিমাণ কাজুবাদাম রফতানি করে, তার ৫০-৬০ ভাগ বিদেশ থেকে আমদানি করে তারপর প্রক্রিয়াজাত করে রফতানি করে। আমাদের দেশেও কাজুবাদাম উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাত করে ভিয়েতনামের মতো দৃষ্টান্ত স্থাপন করা সম্ভব। সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের কৃষি মন্ত্রণালয়াধীন বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও অঞ্চল পর্যায়ের কর্মকর্তাগন, জনপ্রতিনিধি, প্রিন্ট ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, গবেষক ও উন্নয়নকর্মীগণ, ব্যবসায়ি কৃষক কৃষাণীরা অংশগ্রহণ করেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে মতামত ব্যক্ত করেন। মতবিনিময় সভার পূর্বে সকালে কৃষিমন্ত্রী মহোদয় রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার কুতুবছড়ি গ্রামে এবং নানিয়ানচর উপজেলার দ্বিচান পাড়া গ্রামে কৃষক পর্যায়ে কেঁচো কম্পোস্ট উৎপাদন, ড্রাগনফল চাষ, সূর্যমুখী চাষ, গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ, কফি বাগান, কাজুবাদাম বাগান, বসতবাড়ির আংগীনায় পারিবারিক পুষ্টি বাগানসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শণ করেন ও স্থানীয় কৃষক-কৃষাণীদের সাথে মতবিনিময় করেন। তাছাড়া দুপুরে কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ প্রকল্পের আওতায় রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালকের কার্যালয়ে কৃষি আবহাওয়া রেডিও, রাঙ্গামাটি (এফএম ৯৮.০) ও ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ডের উদ্বোধন করেন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস